এম শাহজাহান ॥ ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের উদ্যোগে দেশের প্রধান দু’দলের মহাসচিব পর্যায়ে সংলাপ হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাড়া পেয়েছে এফবিসিসিআই। এছাড়া এফবিসিসিআইয়ের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে, সংলাপ ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল বৈঠক করবেন। এ ব্যাপারে রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করেন এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দীন আহ্মেদ। ওই সাক্ষাতের পর আগামী ৭ নবেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের এ গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের সময়সূচী নির্ধারিত হয়েছে। চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট উত্তরণে এফবিসিসিআইয়ের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যদিও গত শনিবার রাতে এফবিসিসিআই সভাপতির নেতৃত্বে ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধিদল বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর গুলশানের কার্যালয়ে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানে দেশের প্রধান দু’দলের মহাসচিব পর্যায়ে সংলাপে বসার জন্য ব্যবসায়ী নেতাদের প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
এ প্রসঙ্গে কাজী আকরাম উদ্দীন আহ্মেদ জনকণ্ঠকে বলেন, দু’দলের মহাসচিব পর্যায়ে সংলাপ হচ্ছে। কেন হবে না? চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে দু’নেত্রীই আন্তরিক। তিনি বলেন, আমি বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছি। আর আজ (রবিবার) সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করলাম। তিনি এফবিসিসিআইয়ের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। আগামী ৭ নবেম্বরের পর সংলাপে বসার জন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফ সাহেবকে আহ্বান করবেন। আর বিরোধীদলীয় নেত্রী বিএনপি মহাসচিবকে সংলাপে বসার জন্য বলেছেন। তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী। সংলাপ হবে, একই সঙ্গে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের সমাধানও হবে। এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের জন্য যেমন সমান সুযোগের কথা বলে, ঠিক আমরা ব্যবসায়ীরা ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সমান সুযোগ চাই। দেশের অর্থনীতি ভাল হলে জাতির মর্যাদা বাড়বে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে শান্তিপূর্ণ পরিবেশের নিশ্চয়তা চাই।
জানা গেছে, ব্যবসায়ীদের এ প্রচেষ্টাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধীদলীয় নেত্রী স্বাগত জানিয়ে সংলাপের উদ্যোগ নিলেও আজ সোমবার থেকে ফের তিন দিনের টানা হরতাল পালন করবে বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা ১৮ দল। ফলে সংলাপ নিয়ে দুনেত্রী আন্তরিক হলেও শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসন হবে কী না তা নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা রয়েছে ব্যবসায়ীদের। এ প্রসঙ্গে স্বাধীনতা ব্যবসায়ী পরিষদের আহ্বায়ক ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রথম সহসভাপতি আবুল কাশেম আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা সংলাপ ও চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার অবসান চাই। হরতালমুক্ত অর্থনীতি ও বাংলাদেশ চাই। কিন্তু সেই সংলাপে বিরোধীদলীয় নেত্রী সায় দিলেও তিনি হরতাল প্রত্যাহার করছেন না। আবার প্রধানমন্ত্রী বিএনপিকে হরতাল প্রত্যাহারের অনুরোধ করছেন। এ অবস্থায় মহাসচিব পর্যায়ে সংলাপ হলেও সেই সংলাপ কতটা আন্তরিকতার সঙ্গে হবে সেটাই দেখার বিষয়। তিনি বলেন, সংলাপ হতে হবে আন্তরিক পরিবেশে এবং শর্তহীনভাবে। একদিকে গাড়ি পুড়বে, ককটেলে মানুষ মরবে আর অন্যদিকে সংলাপ! অথচ চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানে মহাসচিব পর্যায়ে এই সংলাপের বিকল্প কিছু নেই। সংলাপ হলে সমাধানেরও একটি পথ বেরিয়ে আসার সুযোগ তৈরি হবে। এই ব্যবসায়ী নেতার মতে, সাংবিধানিক পন্থায় নির্বাচন ও গণতন্ত্র রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বদলীয় সরকারে সব রাজনৈতিক দলের দলের আসা উচিত। কিন্তু প্রধান বিরোধীদল বিএনপি নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থার দাবি থেকে সরে আসছে না। ফলে পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে।
Post a Comment