[Featured Post][featured][recent][5]

জনপ্রিয় পোস্ট

মারিয়ানা’স ওয়েব কি? ইন্টারনেট এর এই সবচেয়ে রহস্যময় ও অন্ধকার স্থান সম্পর্কে জানুন

অনেকেই হয়ত মারিয়ানা'স ওয়েব এর নাম শুনেছেন; আবার অনেকে হয়ত শুনেন নি। মারিয়ানা'স ওয়েব আসলে কি? আমরা কি মারিয়ানা'স ওয়েব সার্ফ ক...

লোকসভায় মারামারি, এমপিদের হাতে পেপার স্প্রে-ছুরি
তেলেঙ্গানা রাজ্য নিয়ে আগের দিনের উত্তেজনা মারামারিতে গড়াল ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায়, যাতে পেপার স্প্রে ছিটানোর পাশাপাশি ছুরি প্রদর্শনের ঘটনাও ঘটেছে।

 হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়া এমপিরা বৃহস্পতিবার চেয়ার টেবিলও ভাংচুর করেছে বলে ভারতের সংবাদ মাধ্যমের খবের বলা হয়। যে কারণে ১৬ জন এমপিকে বহিষ্কার করেছেন স্পিকার মীরা কুমার।

নজিরবিহীন এই হট্টগোলের মধ্যেই উপস্থাপন হয়েছে তেলেঙ্গানা বিল, যদিও উত্থাপনের আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্দের কাছ থেকে বিলের কাগজ ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টাও হয়েছিল।
 সাড়ে ১০টায় অধিবেশন বসার পর ১১টা পাঁচ মিনিটে হট্টগোলের মুখে তা মুলতবি হয়ে যায়। এরপর ১২টায় অধিবেশন শুরু হলেও আরেকদফা মুলতবির পর বিল উত্থাপন হলে অধিবেশন সোমবার পর্যন্ত মুলতবি করেন স্পিকার।
 ওই সময় ছিটানো পেপার স্প্রে এতটাই ছড়িয়েছিল যে মীরা কুমার অধিবেশন কক্ষ লাগোয়া স্পিকারের কার্যালয়ে থাকতে না পেরে বাড়িতে চলে যান বলে পিটিআই জানিয়েছে।

নজিরবিহীন এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কমল নাথ বলেন, “যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, তা আমাদের সংসদীয় গণতন্ত্রের জন্য একটা বড় কলঙ্ক।”

স্পিকার মীরা কুমার ক্ষুব্ধ হয়ে বলেছেন, “এটি একটি কলঙ্ক হয়ে থাকল।”
 অন্ধ্র প্রদেশকে ভেঙে তেলেঙ্গানা নামে নতুন রাজ্যের রূপরেখা প্রণয়ন নিয়ে কিছুদিন ধরেই উত্তেজনা চলছিল। সমৃদ্ধ শহর হায়দ্রাবাদকে নতুন রাজ্যে অন্তর্ভুক্তির ঘোর বিরোধী অন্ধ্রের এমপিরা এবং এক্ষেত্রে সরকার ও বিরোধী দল সবাই একজোট।

বুধবারও তেলেঙ্গানার রূপরেখা নিয়ে আলোচনা ওঠার পর ব্যাপক হৈ চৈ এবং মারামারির উপক্রম হয়েছিল। যাতে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।
 বৃহস্পতিবারের ঘটনা তাকেও ছাড়িয়ে যায়, যদিও কেন্দ্রীয় সরকার নিরাপত্তার প্রায় সব রকম ব্যবস্থাই নিয়েছিল।

দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্দে তেলেঙ্গানা বিল পেশ করেন। এর আগে বেলা পৌনে ১২টার দিকে বিজয় চকে পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে তেলেঙ্গানা রাজ্যের পক্ষে-বিপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর যখন বিলটি পেশ করছিলেন তখন তার হাত থেকে বিল কেড়ে নেয়ার চেষ্টা চলে, যা টেলিভিশনের ছবিতে দেখা যায়।
এক পর্যায়ে বিলের বিরোধিতায় ক্ষমতাসীন কংগ্রেস সদস্য এল রাজাগোপাল মরিচের গুঁড়ো ছড়িয়ে দেন। টেবিলের ওপর একটি কাচের গ্লাসও ভাঙেন তিনি।

রাজাগোপাল অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি আত্মরক্ষার জন্য পেপার স্প্রে করেছেন।

মরিচের গুঁড়ো ছিটানোর পর রাজাগোপালের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন প্রতিপক্ষের কয়েকজন এমপি। পরে তাকে পার্লামেন্টের কর্মীরা উদ্ধার করেন।

এ সময় তেলেগু দেশম পার্টির (টিডিপি) সদস্য বেণুগোপাল পকেট থেকে ছুরি বের করেন বলে অভিযোগ আছে, যদিও তিনি ছুরি দেখানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তাকে লোকসভার সেক্রেটারি জেনারেলের টেবিলের মাইক ভেঙে ফেলতে দেখা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা বলেন, চোখে-মুখে মরিচের গুঁড়ো লাগায় কাশতে শুরু করেন কাছাকাছি থাকা লোকসভার সদস্যরা। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই সময় হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়া সদস্যদের নিরস্ত করতে গিয়ে আহত হন তৃণমূলের এক সদস্য।

অসুস্থ হয়ে পড়া এমপিদের শুশ্রূষায় পার্লামেন্টের চিকিৎসককে দ্রুত ডাকা হয়। কয়েকজন এমপিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে রাম মনোহর লোহিয়া (আরএমএল) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

জি নিউজ জানিয়েছে, লোকসভার অন্তত তিন সদস্যকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেয়া হয়। তবে তাদের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন ওই হাসপাতালের চিকিৎসক এইচএস খার।

টেলিভিশন চিত্রে দেখা যায়, এমপিরা সংসদ ভবন থেকে কাশতে কাশতে বের হচ্ছেন। অনেকের চোখ দিয়ে পানি ঝরছে।

স্পিকার অসুস্থবোধ করলে তাকে বেলা ১টার দিকে বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়।

নিম্নকক্ষ লোকসভার উত্তেজনা এক পর্যায়ে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায়ও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানকার সদস্যরা অন্ধ্রপ্রদেশকে না ভাঙার দাবিতে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখান।

উত্তেজিত কয়েকজন সদস্য রাজ্যসভার সভাপতির আসনের সামনের নিরাপত্তা বেষ্টনি টপকে ঢুকে পড়েন এবং মাইক্রোফোন ভাঙার চেষ্টা চালান।

বেলা পৌনে ১টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্দে জানান, তেলেঙ্গানা বিল পার্লামেন্টে উপস্থাপিত হয়েছে এবং এটি এখন পার্লামেন্টের সম্পত্তি।

তুলকালাম কাণ্ডের পর বেলা ২টায় উভয় কক্ষের অধিবেশন শুরুর পরও তেলেঙ্গানা ইস্যূতে বিতর্ক চলে। এর কিছুক্ষণ পরই রাজাগোপালসহ ১৬ সদস্যকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়া হয়।

বিকালের অধিবেশন শুরুর আধাঘণ্টার মধ্যে টিডিপির সদস্য কে নারায়ানা রাও হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে আরএমএল হাসপাতালে নেয়া। পরে অবশ্য চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি আশঙ্কামুক্ত।

সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কমল নাথ পিটিআইকে বলেন, “এমপিরা কক্ষের ভেতরে গ্যাস ব্যবহার করার চেষ্টার করেছে।.....তবে গ্যাসের ব্যবহার আমি দেখিনি। এমপিরা ছোরা, চাকু, গ্যাস অন্যান্য অস্ত্র ব্যবহার করেছিল বলে আমাকে জানানো হয়েছে”।

লোকসভার স্পিকার মীরা কুমার এবং বিজেপি নেতা এলকে আদবানি এই ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

লোকসভায় বিরোধীদলীয় নেতা সুষমা স্বরাজ এ ঘটনার জন্য ক্ষমতাসীন কংগ্রেসকেই দায়ী করেছেন।

ঘটনার সময় রাহুল গান্ধী অধিবেশনে থাকলেও পেপার স্প্রের পর তাকে চলে যেতে দেখা যায়। 

গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া লোকসভা অধিবেশনের পুরো সময়টা জুড়েই অস্থিরতার সৃষ্টি করেছে তেলেঙ্গানা রাজ্যবিরোধী এমপিরা।

অন্ধ্রপ্রদেশের ২৩টির মধ্যে ১০টি এলাকা নিয়ে তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, যার লোকসংখ্যা হবে সাড়ে ৩ কোটি। হায়দ্রাবাদ শহরও তেলেঙ্গানার মধ্যে পড়েছে।

Post a Comment