'বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক উন্নয়নের চমত্কার সূচনা'
সুষমা স্বরাজের ঢাকা ত্যাগ
ইত্তেফাক রিপোর্ট
পররাষ্ট্র মন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সফরে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের চমত্কার সূচনা হয়েছে বলে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে দেশটির বর্তমান সরকার বাংলাদেশের নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ করে যাবে এবং দুই দেশের সম্পর্ক আরো এগিয়ে নেবে সফর শেষে এমন প্রত্যাশাই ব্যক্ত করেছে তারা। তবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যার সমাধান এ দেশের জনগণকেই করতে হবে বলে তারা মনে করে। শুক্রবার দুপুরে তিনদিনের বাংলাদেশ সফর শেষে সুষমা স্বরাজের ঢাকা ত্যাগের পূর্বে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরউদ্দীন এক সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন। বিমানবন্দরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে বিদায় জানান পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক।
শুক্রবার সফরের তৃতীয় দিনে ব্যস্ত সময় কাটান সুষমা স্বরাজ। সকালে তিনি রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করেন এবং বাংলাদেশ-ভারত সুসম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করেন। এরপর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ফিরে আসার পর সুষমা স্বরাজের সঙ্গে প্রথম সৌজন্য সাক্ষাত্ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল। এ সময় তাঁদের মধ্যে প্রায় আধা ঘণ্টা আলাপ হয়। এরপর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ করেন প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টা মসিউর রহমান ও ড. গওহর রিজভী। সবার শেষে হোটেল সোনারগাঁওয়ে সুষমা স্বরাজের সঙ্গে সাক্ষাত্ ও একান্তে বৈঠক করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ঢাকা ছাড়ার আগে সুষমা স্বরাজ জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে তাঁর সংসদ ভবনের কার্যালয়ে দেখা করেন।
তিনদিনের শুভেচ্ছা সফরের বিষয়ে বিমানবন্দরে তার মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আকবরউদ্দীন বলেন, আমাদের দৃষ্টিতে এই সফর সন্তোষজনক ও ফলপ্রসূ হয়েছে। আমরা আশা করি, মোদী সরকার বাংলাদেশের নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ করে যাবে এবং দুই দেশের সম্পর্ক আরো এগিয়ে নেবে।
বিএনপি নেতার সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি সরাসরি কোনো উত্তর না দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের সরকার ও সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিরা ভারতের সঙ্গে আরো বন্ধুত্বপূর্ণ, ব্যাপক সহযোগিতা ও যোগাযোগ বৃদ্ধিতে আগ্রহী রয়েছেন। এই উপলব্ধি নিয়েই আমরা দিল্লি ফিরে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টা, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকের পর এ ধরনের উপলব্ধি আমাদের হয়েছে। এটা একটি চমত্কার সূচনা। দুই দেশের মধ্যেকার উদ্বেগ দূর করে এবং একে অন্যের প্রতি বন্ধুসুলভ মনোভাব নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে এগিয়ে নেয়ার ব্যাপারে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে।
ভারত সরকার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কাজ করে যাবে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার কাজ করে থাকে সরকারের সঙ্গে। ভারতের সরকার কাজ করবে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যা থাকলে তা এ দেশের জনগণকেই সমাধান করতে হবে।
মশিউর রহমান ও গওহর রিজভীর সঙ্গে সাক্ষাত্
সুষমা স্বরাজের সঙ্গে সাক্ষাত্ শেষে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমান বলেন, সাক্ষাতে উন্নয়ন সহযোগিতা প্রসারিত করার বিষয়ে কথা হয়েছে। দুই দেশের সম্পর্ক অটুট থাকবে এবং আরো অগ্রসর হবে বলে আশা করি। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বিষয়ে কোনো আলাপ হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপ করার তেমন কোন ইচ্ছা নেই। ভারতের কংগ্রেস সরকার পরিবর্তনে দুই দেশের সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক ভালো হলে দলের পরিবর্তনে তাতে প্রভাব পড়ে না। প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক আরো ভালো করার উদ্দেশ্য নিয়ে সাক্ষাত্ করেছি।
উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে তিনদিনের এক 'শুভেচ্ছা' সফরে বাংলাদেশে আসেন ভারতের নতুন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। সফরের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার তিনি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন। এর আগে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে বহুদিন ধরে ঝুলে থাকা অভিন্ন তিস্তার পানি চুক্তি নিয়ে অভ্যন্তরীণ সমঝোতা তৈরির চেষ্টা করছে ভারত। পাশাপাশি স্থল সীমান্ত চুক্তির (এলবিএ) প্রটোকলগুলো ভারতীয় রাজ্যসভায় অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানানো হয়।
এছাড়া ঐদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিস্) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন তিনি। বক্তব্যে তিনি দুই দেশের সুসম্পর্কের গুরুত্ব উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, ভারতের নতুন সরকারের পররাষ্ট্র নীতির ভিত্তি হবে জাতীয় স্বার্থকে সমুন্নত রেখে সকল দেশের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটানো। নিকটতম প্রতিবেশীর সঙ্গে ফলপ্রসূ অংশীদারিত্বের সম্পর্ক স্থাপন ছাড়া ভারত তার উন্নয়নকে পূর্ণাঙ্গ ও টেকসই করতে পারবে না।
সুষমা স্বরাজের ঢাকা ত্যাগ
ইত্তেফাক রিপোর্ট
পররাষ্ট্র মন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সফরে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের চমত্কার সূচনা হয়েছে বলে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে দেশটির বর্তমান সরকার বাংলাদেশের নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ করে যাবে এবং দুই দেশের সম্পর্ক আরো এগিয়ে নেবে সফর শেষে এমন প্রত্যাশাই ব্যক্ত করেছে তারা। তবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যার সমাধান এ দেশের জনগণকেই করতে হবে বলে তারা মনে করে। শুক্রবার দুপুরে তিনদিনের বাংলাদেশ সফর শেষে সুষমা স্বরাজের ঢাকা ত্যাগের পূর্বে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরউদ্দীন এক সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন। বিমানবন্দরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে বিদায় জানান পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক।
শুক্রবার সফরের তৃতীয় দিনে ব্যস্ত সময় কাটান সুষমা স্বরাজ। সকালে তিনি রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করেন এবং বাংলাদেশ-ভারত সুসম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করেন। এরপর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ফিরে আসার পর সুষমা স্বরাজের সঙ্গে প্রথম সৌজন্য সাক্ষাত্ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল। এ সময় তাঁদের মধ্যে প্রায় আধা ঘণ্টা আলাপ হয়। এরপর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ করেন প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টা মসিউর রহমান ও ড. গওহর রিজভী। সবার শেষে হোটেল সোনারগাঁওয়ে সুষমা স্বরাজের সঙ্গে সাক্ষাত্ ও একান্তে বৈঠক করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ঢাকা ছাড়ার আগে সুষমা স্বরাজ জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে তাঁর সংসদ ভবনের কার্যালয়ে দেখা করেন।
তিনদিনের শুভেচ্ছা সফরের বিষয়ে বিমানবন্দরে তার মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আকবরউদ্দীন বলেন, আমাদের দৃষ্টিতে এই সফর সন্তোষজনক ও ফলপ্রসূ হয়েছে। আমরা আশা করি, মোদী সরকার বাংলাদেশের নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ করে যাবে এবং দুই দেশের সম্পর্ক আরো এগিয়ে নেবে।
বিএনপি নেতার সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি সরাসরি কোনো উত্তর না দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের সরকার ও সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিরা ভারতের সঙ্গে আরো বন্ধুত্বপূর্ণ, ব্যাপক সহযোগিতা ও যোগাযোগ বৃদ্ধিতে আগ্রহী রয়েছেন। এই উপলব্ধি নিয়েই আমরা দিল্লি ফিরে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টা, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকের পর এ ধরনের উপলব্ধি আমাদের হয়েছে। এটা একটি চমত্কার সূচনা। দুই দেশের মধ্যেকার উদ্বেগ দূর করে এবং একে অন্যের প্রতি বন্ধুসুলভ মনোভাব নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে এগিয়ে নেয়ার ব্যাপারে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে।
ভারত সরকার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কাজ করে যাবে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার কাজ করে থাকে সরকারের সঙ্গে। ভারতের সরকার কাজ করবে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যা থাকলে তা এ দেশের জনগণকেই সমাধান করতে হবে।
মশিউর রহমান ও গওহর রিজভীর সঙ্গে সাক্ষাত্
সুষমা স্বরাজের সঙ্গে সাক্ষাত্ শেষে প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমান বলেন, সাক্ষাতে উন্নয়ন সহযোগিতা প্রসারিত করার বিষয়ে কথা হয়েছে। দুই দেশের সম্পর্ক অটুট থাকবে এবং আরো অগ্রসর হবে বলে আশা করি। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বিষয়ে কোনো আলাপ হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতের হস্তক্ষেপ করার তেমন কোন ইচ্ছা নেই। ভারতের কংগ্রেস সরকার পরিবর্তনে দুই দেশের সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক ভালো হলে দলের পরিবর্তনে তাতে প্রভাব পড়ে না। প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক আরো ভালো করার উদ্দেশ্য নিয়ে সাক্ষাত্ করেছি।
উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে তিনদিনের এক 'শুভেচ্ছা' সফরে বাংলাদেশে আসেন ভারতের নতুন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। সফরের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার তিনি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন। এর আগে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে বহুদিন ধরে ঝুলে থাকা অভিন্ন তিস্তার পানি চুক্তি নিয়ে অভ্যন্তরীণ সমঝোতা তৈরির চেষ্টা করছে ভারত। পাশাপাশি স্থল সীমান্ত চুক্তির (এলবিএ) প্রটোকলগুলো ভারতীয় রাজ্যসভায় অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানানো হয়।
এছাড়া ঐদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিস্) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন তিনি। বক্তব্যে তিনি দুই দেশের সুসম্পর্কের গুরুত্ব উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, ভারতের নতুন সরকারের পররাষ্ট্র নীতির ভিত্তি হবে জাতীয় স্বার্থকে সমুন্নত রেখে সকল দেশের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটানো। নিকটতম প্রতিবেশীর সঙ্গে ফলপ্রসূ অংশীদারিত্বের সম্পর্ক স্থাপন ছাড়া ভারত তার উন্নয়নকে পূর্ণাঙ্গ ও টেকসই করতে পারবে না।
Post a Comment