[Featured Post][featured][recent][5]

জনপ্রিয় পোস্ট

মারিয়ানা’স ওয়েব কি? ইন্টারনেট এর এই সবচেয়ে রহস্যময় ও অন্ধকার স্থান সম্পর্কে জানুন

অনেকেই হয়ত মারিয়ানা'স ওয়েব এর নাম শুনেছেন; আবার অনেকে হয়ত শুনেন নি। মারিয়ানা'স ওয়েব আসলে কি? আমরা কি মারিয়ানা'স ওয়েব সার্ফ ক...

‘বোমা আনোয়ারের’ বাসা থেকে বিস্ফোরকসহ জিহাদী বইপত্র উদ্ধার
তার স্ত্রীকে গোয়েন্দা হেফাজতে নেয়া হয়েছে
বিশেষ প্রতিনিধি ॥ রাজধানীর কাঁটাবনে বিস্ফোরণে গুরুতর আহত আনোয়ার হোসেনের আনন্দনগরের বাসায় সোমবার সকাল থেকে অভিযান চালিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বোমা, বোমা তৈরির উপকরণ, নির্দেশিকা (ম্যানুয়াল) ও জিহাদী বইপত্র, বিস্ফোরকের গুঁড়োসহ, বোমা বানানোর নানা উপকরণ, হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবির ব্যাখ্যা, মুজাহিদীনদের ফিটনেসের উপায় ও ইসলামী আন্দোলনের লিফলেট। রবিবার রাজধানীর কাঁটাবন এলাকায় পকেটে থাকা হাতবোমার বিস্ফোরণে আহত হয় আনোয়ার (৩০)। বাড্ডার আফতাবনগরের ভাড়া বাসা থেকে বোমা, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও ম্যানুয়াল উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা বোমাগুলোও বেশ শক্তিশালী। এতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আছে। ডিবির বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলের প্রধান অতিরিক্ত উপকমিশনার ছানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টার দিকে আনোয়ারের আনন্দনগরের বাসায় অভিযান শুরু হয়। আনোয়ারের স্ত্রী জেসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ গোয়েন্দা বিভাগের কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে।
সোমবার বেলা ২টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশ দক্ষিণের (ডিবি) বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার (এডিসি) ছানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল বাড্ডা থানার আফতাব নগরের ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির কাছে আনসার ক্যাম্পের পাশে জনৈক আব্দুর রউফের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। অভিযান চালিয়ে সেখানকার একটি কক্ষ থেকে ২টি ককটেল, ককটেল তৈরির সরঞ্জাম ও ম্যানুয়াল এবং কিছু জিহাদী বই উদ্ধার করা হয়।
এডিসি ছানোয়ার সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, যে কক্ষটিতে বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও ম্যানুয়াল উদ্ধার করা হয় সেখানেই বোমা প্রস্তুত করা হতো বলে ধারণা করা হচ্ছে। উদ্ধারকৃত ম্যানুয়াল ও জিহাদী বই থেকে ধারণা করা হচ্ছে, আনোয়ারের জেএমবির সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বলেছেন, ২০০৯ সালে জেএমবির আস্তানা থেকে উদ্ধার করা ম্যানুয়াল ও জিহাদী বইগুলোর সঙ্গে এগুলোর মিল রয়েছে। জেএমবির সঙ্গে আনোয়ারের সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া না গেলেও তার সঙ্গে যে জঙ্গী সংগঠনের সম্পর্ক রয়েছে এ ব্যাপারে পুলিশ নিশ্চিত।
আহত আনোয়ারের স্ত্রী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার স্বামীর সঙ্গেই ছিলেন।
পুলিশী নজরদারিতে রাখার পর তাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আফতাব নগরের বাড়িটিও গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে। এর সঙ্গে আরও কেউ সংশ্লিষ্ট কি না, তা খুঁজে বের করতে অভিযান অব্যাহত আছে।
আনোয়ারের গ্রামের বাড়ি বরিশাল। তারা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায়। আনন্দনগরে আনোয়ার হোসেন যে বাড়িটিতে থাকেন সেটির মালিক আবদুর রব। এই বাড়ির একটি ঘরে তিনি স্ত্রী জেসমিন বেগম ও দুই সন্তান সিয়াম (৪) ও জান্নাতকে (১) বসবাস করছিলেন। আনোয়ারের এক প্রতিবেশী জানান, আনোয়ার আনারকলি মার্কেটে খেলনার ব্যবসা করেন বলে তাঁরা শুনেছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, রাজধানীর কাঁটাবনে রবিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে বিস্ফোরণটি ঘটে। এর পরই একজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। আনোয়ারের কাছে থাকা বোমাটি বিস্ফোরিত হলে তিনি আহত হন। আনোয়ারকে পুলিশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে পুলিশ পাহারায় তার চিকিৎসা চলছে। ঘটনার পর পরই খবর পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল ঘটনাস্থলে যায়। তারা কাঁটাবনের মোড় থেকে ফুলের দোকান পর্যন্ত চারপাশ হলুদ ফিতা দিয়ে ঘিরে ফেলে। এর পর বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলের সদস্যরা চিংড়ি রেস্টুরেন্টের সামনে পড়ে থাকা একটি অবিস্ফোরিত বোমার নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটান। সাধারণ ককটেলের চেয়ে বহুগুণ বেশি শব্দে তা বিস্ফোরিত হয়। হরতালের আগের দিন রাজধানীর কাঁটাবনে বিস্ফোরণে আহত আনোয়ার হোসেনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বোমা ও বিস্ফোরক পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের হরতালের আগের দিন সকালে কাঁটাবনে বিস্ফোরণে আহত হন আনোয়ার। বিস্ফোরিত বোমাটি তাঁর পকেটেই ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। হরতালের আগের দিন বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণ এবং গাড়ি পোড়ানোর মধ্যে এই ঘটনার পর রাজধানীর আফতাব নগরে আনোয়ারের বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। বিস্ফোরণে আহত আনোয়ার বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) কৃষ্ণপদ রায় সাংবাদিকদের বলেছেন, এখন পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া আলামত দেখে মনে হচ্ছে, আনোয়ার একটি গোষ্ঠীর অংশ। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আনোয়ার হোসেনের এখনও জ্ঞান ফেরেনি। তাঁর দুই ঊরু উড়ে গেছে, বুক ও হাতে জখম রয়েছে, তার একটি চোখ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।
আনোয়ার হোসেনের মা পারভীন বেগম সোমবার বিকেলে জানান, তাঁর ছেলে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তবে তিনি গত এক বছর ধরে তাঁর ছেলের সঙ্গে থাকেন না। এর চেয়ে বিস্তারিত কিছু জানেন না তিনি।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে, হরতালের আগের দিন রবিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে কাঁটাবন থেকে নিউমার্কেট যাওয়ার রাস্তায় একটি চায়ের দোকানের সামনে নিজের পকেটে থাকা হাতবোমার বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন আনোয়ার। বিস্ফোরণে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায় তার শরীরের নিচের অংশ। পুলিশ তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। বিস্ফোরণের কিছুক্ষণ আগে আনোয়ার চায়ের দোকানে বসা ছিলেন। তার সঙ্গে আরও একজন ছিল। বোমাটি বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গেই অন্য লোকটি দৌড়ে পালিয়ে যায়। আনোয়ার মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থানার হেমায়েত উদ্দীন খানের ছেলে। রাজধানীর আনারকলি সুপার মার্কেটে আনোয়ারের একটি খেলনার দোকান রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, আনোয়ারের বাড়িতে দুটি বোমা এবং বোমা তৈরির সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির এই ছাত্রের বাসায় জিহাদী পোস্টার, প্রচারপত্র ও পুস্তিকাও পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে আনোয়ার কোন্ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে উপকমিশনার মাসুদ জানান। হরতালের আগের দিন কাঁটাবনে বিস্ফোরণে আহত আনোয়ার হোসেন।
ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার ছানোয়ার হোসেন বলেছেন, সকাল ১০টার দিকে আনোয়ার হোসেনের আফতাব নগরের বাসায় অভিযান চালিয়ে বোমাসহ অন্যান্য জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে। ওই বাসায় মা, বোন ও স্ত্রীসহ থাকতেন আনোয়ার। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাঁটাবনে রবিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে বিস্ফোরণটি ঘটে। এর পরই একজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশের রমনা বিভাগের সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম বলেন, আনোয়ারের কাছে থাকা বোমাটি বিস্ফোরিত হলে তিনি আহত হন। আনোয়ারকে পুলিশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে পুলিশ পাহারায় তাঁর চিকিৎসা চলছে।

Post a Comment