[Featured Post][featured][recent][5]

জনপ্রিয় পোস্ট

মারিয়ানা’স ওয়েব কি? ইন্টারনেট এর এই সবচেয়ে রহস্যময় ও অন্ধকার স্থান সম্পর্কে জানুন

অনেকেই হয়ত মারিয়ানা'স ওয়েব এর নাম শুনেছেন; আবার অনেকে হয়ত শুনেন নি। মারিয়ানা'স ওয়েব আসলে কি? আমরা কি মারিয়ানা'স ওয়েব সার্ফ ক...

দুরন্ত শিশুর পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি!
সেলিম জাহাঙ্গীর, রাজশাহী ॥ শিশুটির পায়ে এমন ডা-াবেড়ি দেখে অনেকেই পাগল মনে করলেও এ শিশুটি মোটেই পাগল নয়।
সদা হাস্যোজ্জ্বল মিষ্টি চেহারার ছোট্ট এ শিশুটির নাম পরশ। তার আধো আধো কথা ও চোখের চাহনি দেখলেই যে কোন মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যাবে। পরশের বাড়ি রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানার গৌরহাঙ্গা উপহার সিনেমা হলের পেছনে। বাবা একটি ছাপাখানায় কাজ করেন। মায়ের নাম পারুল। স্বল্প আয়ের কারণে পরশের মা পারুল সংসারের প্রয়োজনে বাসাবাড়িতে কাজ করেন। দারিদ্র্যের মধ্যে বেড়ে ওঠে একমাত্র সন্তান পরশ। পরশের বাবা-মা ঘরের বাইরে কাজে থাকার কারণে একমাত্র ছেলে পরশ মায়ের ¯হে-মমতা, ভালবাসা আর বাবার আদর কখনই পায়নি। বাবা-মায়ের তরফেও সন্তানের প্রতি একটু খেয়াল রাখা, আদরযত্ন করা ও ভালবাসার সুযোগ মেলেনি। দুরন্ত শিশু পরশের বয়স ৭ বছর। ছোট থেকেই পরশ অত্যন্ত চঞ্চল প্রকৃতির। ফলে একলা ঘরে পরশ মা-বাবা ছাড়া হয়ে ওঠে আরও ডানপিটে। ঘরে তার মা ও বাবাকে না পেয়ে পরশ ক্রমেই ঘরের বাইরে একাই বের হতে থাকে। একদিন দুই দিন করে সে তার ঘরের গ-ি পেরিয়ে চলে যায় পদ্মানদীর পাড়ে। মা-বাবার অনুপস্থিতিতে প্রায়ই সে নদীর পাড়ে যায়। কখনও সিমলা পার্ক আবার কখনও সাহেববাজার আরডিএ মার্কেটে। তার নাওয়া-খাওয়ার ব্যাপারে বাবা মার অমনোযোগী আচরণই তাকে ঘরের বাইরে নিয়ে যায়। ক্ষুধার জ্বালায় এ ছোট্ট পরশ মানুষের কাছে হাত পেতে খাবার চায়, পয়সা চায়। অনেকেই তার মিষ্টি চেহারা শিশুতোষ মন দেখে টাকা পয়সা ও খাবার দেয়। এমন ঘটনা তার বাবা মায়ের কানে প্রায়ই আসে, তার ছেলে পরশ মানুষের দ্বারে দ্বারে হাত পেতে টাকাপয়সা চায়। এমন ঘটনা জানার পর তার বাবা ও মা তাদের সন্তান পরশকে বুঝায় যে, মানুষের কাছে টাকা চাওয়া অপরাধ ও এটা খারাপ কাজ। কিন্তু অবুঝ ছোট্ট শিশুর মন মানে না, সে যথানিয়মে ছুটে যায় পদ্মানদীর পাড়ে, সিমলা পার্কে অথবা আরডিএ মার্কেটে হাত পেতে মানুষের কাছে টাকা চায়। কোন কাজ হয় না দেখে পরশের বাবা-মা পরশের পায়ে পরায় ডা-াবেড়ি শিকল। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাকে ঘরে আটকে রাখা সম্ভব হয় না। পরশ এ ডাণ্ডাবেড়ি নিয়ে এখন দূরে না যেতে পারলেও বাড়ির সীমানা পেরিয়ে উপহার সিনেমা হলের সামনে, কখনও আশপাশে বসে বসে অসহায় দৃষ্টিতে চেয়ে চেয়ে তার সমবয়সী শিশুদের দেখে, দেখে ওদের খেলার দৃশ্য। পরশের সঙ্গে কথা বললে এখনও ফুটে ওঠে তার ডানপিটে স্বভাব। এ দৃশ্য যে কেউ দেখলেই মনে করবে একটা উড়ন্ত কবুতরের পায়ে যেন শিকল পরিয়ে তাকে বিকল করে ফেলে রাখা হয়েছে।
এ শিশু পরশের যে বয়সে আর পাঁচটি শিশুর মতো স্কুলে যাওয়ার কথা, খেলা ধুলা করার কথা, সে বয়সে ডা-াবেড়ি পরে ফ্যাল ফ্যাল চোখে তার বয়সের শিশুদের খেলা চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। ডা-াবেড়ি শিকলের কাছে তার দূরন্তপনার যেন মৃত্যু হয়েছে। দুরন্ত শিশুকে ডাণ্ডাবেড়ি মুক্ত করবে কে? একটি উন্মুক্ত বসবাসের স্থানের ব্যবস্থা কি কেউ করে দেবেন?

Post a Comment