[Featured Post][featured][recent][5]

জনপ্রিয় পোস্ট

মারিয়ানা’স ওয়েব কি? ইন্টারনেট এর এই সবচেয়ে রহস্যময় ও অন্ধকার স্থান সম্পর্কে জানুন

অনেকেই হয়ত মারিয়ানা'স ওয়েব এর নাম শুনেছেন; আবার অনেকে হয়ত শুনেন নি। মারিয়ানা'স ওয়েব আসলে কি? আমরা কি মারিয়ানা'স ওয়েব সার্ফ ক...

কারও মুখাপেক্ষী না হয়ে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে
যুব দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাকরির জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী না হয়ে সরকারের দেয়া সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুব ও যুব মহিলারা আত্মকর্মসংস্থানের জন্য মৎস্য চাষ, হাঁস-মুরগী পালন, গবাদিপশুর খামার স্থাপন, শাকসবজির বাগান, অর্থকরী ফসল চাষ, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে পারে। সমবায়ের ভিত্তিতেও তারা এ সব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে পারে। এতে চাকরির চেয়ে অনেক বেশি উপার্জন করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, যুবসমাজের নিজস্ব কর্মসংস্থানে এ সব খাতে যুব উন্নয়ন অধিদফতর, কর্মসংস্থান ব্যাংক, আনসার-ভিডিপি ব্যাংক ও অন্যান্য তফসিলী ব্যাংক সহজশর্তে ঋণ দিচ্ছে। শেখ হাসিনা শুক্রবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় যুব দিবস-২০১৩ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণকালে এ কথা বলেন। খবর বাসসর।
চলতি বছর বিভিন্ন খাতে ১৫ যুবক জাতীয় যুব পদক লাভ করেছেন। তাঁরা হলেন সুনামগঞ্জের মিজানুল হক সরকার, কিশোরগঞ্জের নুরুল আরেফিন লিংকন, ঢাকার গোপীবাগের নাজনিন পারভীন, নারায়ণগঞ্জের আমলাপাড়ার সাবিরা সুলতানা, বান্দরবানের ছিমি দালুপাড়ার মাসিং নু মারমা, ফরিদপুর সদর উপজেলার আলীপুরের তামান্না মোসলেম মীরা, ফেনীর সোনাগাজীর মহিউদ্দিন আহমেদ, নাটোরের বাগাতিপাড়ার সেলিম রেজা, সাতক্ষীরার দেবহাটার আবু আব্দুল্লাহ আল আজাদ, বরিশালের বগুড়া রোডের নাজমা পারভীন সিমু, মৌলভীবাজারের সাতপুরের কামরান হোসেন, দিনাজপুরের রামনগরের আসমাউল হুসনা, ঝালকাঠি সদর উপজেলার ফয়সাল রহমান, ভোলা সদর উপজেলার জাকির হোসেন মহিন ও যশোরের নবদিগন্ত মহিলা সংস্থার আইরিন বেগম।
যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকারের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে এ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেল ও মন্ত্রণালয়টির সচিব নুর মোহাম্মদ, যুব অধিদফতরের মহাপরিচালক অজিত কুমার মুকুতমনি এবং পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে মহিউদ্দিন আহমেদ ও সাবিরা সুলতানা বক্তৃতা করেন।
উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডে নিজেদের নিয়োজিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবসমাজই হচ্ছে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতামুক্ত আধুনিক, অসাম্প্রদায়িক উন্নত বাংলাদেশ গড়ার প্রধান চালিকাশক্তি। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, যুবসমাজ নৈতিকতা, সততা, দেশপ্রেম ও মানবতাবোধের আদর্শ বুকে ধারণ করে দেশ গড়ার মহান কাজে আত্মনিয়োগ করবে। রাজনৈতিক, ব্যক্তিস্বার্থ এবং হীনউদ্দেশ্যে যাতে কোন অপশক্তি যুবসমাজকে বিপথে ঠেলে দিতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি চলতি বছর জাতীয় যুব পদকপ্রাপ্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তাঁরা মাসে ১ লাখেরও বেশি টাকা রোজগার করছেন, যা বিদেশে গিয়েও উপার্জন করা সম্ভব নয়। তাদের এ কর্মকাণ্ড অন্যদের জন্য অনুকরণীয়- এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন, তাঁরা নিজেদের পেশার উন্নয়ন অব্যাহত রেখে বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থান ও পল্লীর দরিদ্র মানুষের উন্নয়নে প্রেরণা যোগাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবসমাজের দুর্বার কর্মস্পৃহা, অদম্য মনোবল যে কোন অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে। তারাই পারে একটি দেশের অর্থনৈতিক-সামাজিক-রাজনীতির ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আনতে। দেশের আর্থসামজিক উন্নয়নের পাশাপাশি সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এ দেশের সাহসী যুবসমাজের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফার সংগ্রাম, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯০ সালের গণআন্দোলন এবং ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে যুবসমাজ আত্মত্যাগের যে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, জাতি তা চিরদিন স্মরণ করবে। জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ এ যুবসমাজকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে না পারলে প্রকৃত জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ জন্য আমরা যখনই সরকারে এসেছি যুবসমাজের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। ১৯৯৬ মেয়াদে তাঁর সরকার সব জেলা ও উপজেলায় যুবক কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও এর স্থাপনা নির্মাণ করেছে এ কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সে সময় ঋণ ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করি। তখন সাভারের যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে খুব খারাপ অবস্থা ছিল। আমরা সেখানে ৫০টি ট্রেডে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, কর্মসংস্থান ব্যাংকের সৃষ্টি এবং কোন সহযোগী জামানত ছাড়াই ৫০ হাজার টাকা বেকার যুবকদের ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। এবার এই ঋণ ১ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এবার তাঁর সরকার দায়িত্বে আসার পর দেশের যুবসমাজের কর্মসংস্থান ও উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হয়েছে। দেশের ৬৪টি জেলা ও ৪৭৬টি উপজেলার বেকার যুবদের উদ্বুদ্ধকরণ, প্রশিক্ষণদান, প্রশিক্ষণোত্তর আত্মকর্মসংস্থান, ঋণ বিতরণ, দারিদ্র্য বিমোচনসহ বিভিন্ন কর্মসূচীও বাস্তবায়িত হয়েছে।
তিনি বলেন, যুব উন্নয়ন অধিদফতর এ পর্যন্ত ৪০ লাখ ৪৬ হাজারেরও বেশি যুবক ও যুবমহিলাকে বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। এর মধ্যে ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ৯৬৫ জন আত্মকর্মী হয়ে নিজেদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অন্য মানুষের কর্মসংস্থানের পথ সুগম করে দিয়েছে। যুব উন্নয়ন অধিদফতরসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান মিলে প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা যুবঋণ বিতরণ এবং ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচীর আওতায় ৬৩ হাজার ১৫৬ জনের অস্থায়ী কর্মসংস্থান হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবসমাজের একটা অংশ অনেক সময় মাদকাসক্তসহ নানা সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়ে পড়ে। এটা খুবই হতাশাব্যঞ্জক। এক্ষেত্রে শুধু তাদের ওপর দোষ চাপালেই চলবে না, তাদের সঠিক পথে পরিচালিত করার দায়িত্ব প্রতিটি অভিভাবকের। যুবসমাজকে আমাদের ঐতিহ্য, জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস, হাজার বছরের পারিবারিক বন্ধন, মূল্যবোধ এ সব বিষয়ে সম্যক ধারণা দিতে হবে এবং তাদের সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। কারণ একজন সচেতন যুবক বা যুব মহিলা কখনই বিপথে যেতে পারে না।

Post a Comment