[Featured Post][featured][recent][5]

জনপ্রিয় পোস্ট

মারিয়ানা’স ওয়েব কি? ইন্টারনেট এর এই সবচেয়ে রহস্যময় ও অন্ধকার স্থান সম্পর্কে জানুন

অনেকেই হয়ত মারিয়ানা'স ওয়েব এর নাম শুনেছেন; আবার অনেকে হয়ত শুনেন নি। মারিয়ানা'স ওয়েব আসলে কি? আমরা কি মারিয়ানা'স ওয়েব সার্ফ ক...

‘কুত্তার বাচ্চা তুই চলে যা’
মুতাসিম বিল্লাহ নাসির, জাবি থেকে : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনকে ‘কুত্তার বাচ্চা’ ‘মিথ্যাবাদী’ ‘স্বৈরাচার’ ‘মুক্তিযুদ্ধ ব্যবসায়ী’ গালি দিয়ে দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদত্যাগ করার দাবি জানিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষকরা। গতকাল রোববার রাত ১২টার দিকে ভিসির বাসভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে ভিসির বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু শিক্ষকদের সাথে বৈষম্যমূলক নীতি গ্রহণ করার অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক। অপরদিকে ভিসির পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষক সমিতির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছে অফিসার সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়ন।
জানা যায়, শিক্ষক সমিতির চলমান ধর্মঘট চাকরি বিধির লঙ্ঘন উল্লেখ করে সমিতির সভাপতিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ও দুই হল প্রাধ্যক্ষকে অব্যহতি, অসুস্থ রোগীকে এ্যাম্বুলেন্স না দেয়ার প্রতিবাদে রাত ১০টার দিকে এ বিষয়ে ভিসির কাছে কারণ জানতে চান সাধারণ শিক্ষক ফোরাম। সে সময়ে এ সংগঠনের সদস্য-সচিব অধ্যাপক কামরুল আহসান ভিসির মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে ওপেন চ্যালেঞ্জ করে ভিসিকে বলেন ‘আপনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৩৮তম স্থায়ী কমিটির মিটিং এ যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তার ব্যাপারে গণমাধ্যমে মিথ্যাচার করেছেন যে বিষয়গুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি তাও আপনি স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত বলে চালিয়ে দিয়েছেন। এখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে আমার অভিযোগ যদি আপনি মিথ্যা প্রমাণ করতে পারেন তাহলে চাকরি ছেড়ে চলে যাবো’। এসময় ভিসিকে বিমর্ষ দেখা যায় তিনি কোন মন্তব্য করতেও রাজি হননি। এতে শিক্ষকরা উত্তেজিত হয়ে ভিসিকে বলেন ‘কুত্তার বাচ্চা তুই চলে যা, তোকে যেতেই হবে’।
সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আমির হোসেন বলেন ‘আপনি যাকে তাকে জামায়াত বলেন অন্ধকারের শক্তি বলেন, এগুলো বলে জাহাঙ্গীরনগরে আপনি জামায়াতকে সামাজিকীকরণ করেছেন। আপনি একা মুক্তিযুদ্ধ করেননি আমিও করেছি সেসময়ে দেশের ৯৯ ভাগ মানুষ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল বরং আপনি নিজেকে পথে ঘাটে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবি করে ব্যবসায় নেমেছেন।
এ সময় আরেক আওয়ামীপন্থী শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষক ফোরামের আহ্বায়ক অধ্যাপক হানিফ আলী ভিসিকে স্বৈরাচার ও ইয়াহিয়া খান উল্লেখ করে বলেন ‘আপনি যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে পারছেন না তাই আপনি চলে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সিন্ডিকেট সদস্য তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আপনি নির্বাচিত সিন্ডিকেট সদস্যদের না জানিয়ে সিন্ডিকেট সভা করেন! আপনি মনে হয় এখনো জানেন না বিশ্ববিদ্যালয় ৭৩-এর আদেশ দিয়ে পরিচালনা হয় না এটি ৭৩-এর অধ্যাদেশ দ্বারা পরিচালিত হয়’।
এসময় ভিসির কাছে জানতে চাওয়া হয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ধর্মঘটের ডাক দেয়ায় কেন কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে? শিক্ষকরা দাবি করেন আপনার কারণে শিক্ষকরা ক্লাসে যেতে পারছে না, শিক্ষার্থীরা শিক্ষা জীবন থেকে বঞ্চিত। আপনি শিক্ষক সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন তা আমাদের সবার বিরুদ্ধে নিতে হবে, আপনাকে এখনি পদত্যাগ করতে হবে পদত্যাগ না করলে আপনাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।
এসময় ভিসি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন ‘আপনারা যে তিনটি দাবি তুলেছেন তার একটি সম্পর্কেও আমি এখন কোনো কথা বলব না। আপনারা এখন বাসায় ফিরে যান এ নিয়ে পরে কথা হবে’। ভিসির শিক্ষকদের কারণ না জানালে এবং পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং তৎক্ষণাৎ অবস্থান করেন।
এদিকে ভিসি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু শিক্ষকদের প্রতি বৈষম্যমূলক নীতিগ্রহণ করার প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষকরা। ইতোমধ্যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহাকে চাপ প্রয়োগে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষকরা। এছাড়া জাহানারা ইমাম হলের প্রভোস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক শ্যামল কুমার রায় ও মীর মোশাররফ হোসেন হলের প্রভোষ্ট থেকে সুকুল্যান কুমার কু-ুকে অব্যহতি দিয়েছেন। সর্বশেষ তিনি আওয়ামীপন্থী শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদারের সাথে অশিষ্ট আচরণ করেছেন। তার কর্মকা-কে চাকরিবিধি লঙ্ঘন উল্লেখ করে নোটিশ পাঠিয়ে হেনস্তা করেছেন এবং বেশ কয়েকবার তাকে জামায়াতপন্থী শিক্ষক হিসেবে গণমাধ্যমে উল্লেখ করেছেন। অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার বলেন ‘আমার প্রতি ভিসির মিথ্যাচারে আমি যেমন মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, তেমনি আমার পরিবারও মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে’।
ভিসি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যমূলক নীতি গ্রহণ করার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

Post a Comment