[Featured Post][featured][recent][5]

জনপ্রিয় পোস্ট

মারিয়ানা’স ওয়েব কি? ইন্টারনেট এর এই সবচেয়ে রহস্যময় ও অন্ধকার স্থান সম্পর্কে জানুন

অনেকেই হয়ত মারিয়ানা'স ওয়েব এর নাম শুনেছেন; আবার অনেকে হয়ত শুনেন নি। মারিয়ানা'স ওয়েব আসলে কি? আমরা কি মারিয়ানা'স ওয়েব সার্ফ ক...

সুবিধাভোগী দুই শতাধিক ব্যক্তির তালিকা ইমিগ্রেশনে
বিশেষ সংবাদদাতা : সরকারের শেষ সময়ে সুবিধাভোগীরা যাতে দেশ ছেড়ে যেতে না পারে সে জন্য দুই শতাধিক ব্যক্তির তালিকা পাঠানো হয়েছে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে পাঠানো ওই তালিকায় মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, প্রভাবশালী আমলা ও উপদেষ্টাদের পিএস, এপিএস ও কতিপয় রাজনৈতিক নেতাসহ অবৈধ সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের নামও রয়েছে। তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে অনেকেই রাতারাতি বিপুল অর্থসম্পদের মালিক হয়েছেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে বিপুল অর্থসম্পদের মালিকরা এরই মধ্যে তাদের অর্জিত টাকা দেশের বাইরে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো ওই তালিকা অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে রাখা হয়েছে। একই সাথে দেশের সকল সীমান্ত এলাকায় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে ওই তালিকা সম্পর্কে দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এপিএস মো: আনিসুর রহমান দোলন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার চেষ্টা করলে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে জিজ্ঞাসাবাদের পর ফিরিয়ে দেয়া হয়। শিক্ষামন্ত্রীর এপিএস মনরঞ্জন বাড়ৈ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে ৫ বছরের ছুটি চেয়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাওয়া ফাইল মন্তরগতিতে চলছে। একটি দায়িত্বশীল সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সরকারের ৫ বছর যারা আস্তাভাজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে যে আগামী দিনগুলোতে বড় ধরনের সংঘাত দেখা দিতে পারে। দ্বিতীয় দফায় আবার ক্ষমতায় আশার কোন সুযোগ নেই এমন আশঙ্কাও রয়েছে তাদের মধ্যে। ওই আশংকায় নিজেদের নিরাপদে রাখতেই দেশ থেকে নানা কায়দায় বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তারা। সুবিধাভোগীদের মধ্যে অনেকে এরই মধ্যে পরিবারের সদস্যদের দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তবে যারা যেতে পারছেন না তারা নিজেদের নিরাপদে রাখতে নানা জনের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। আগামীতে সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিরোধীদলের মোকাবেলায় সরকারপন্থীদের মধ্যে যাতে কোন প্রভাব না পড়ে সে জন্য কতিপয় ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার উপর নজরদারী করার জন্যই ওই তালিকা পাঠানো হয়েছে বলে সূত্র দাবী করে।
একজন দায়িত্বশীল গোয়েন্দা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বর্তমান সরকারের শেষ সময়ে এসে রাজনৈতিক সংঘাতের আশংকা শুধু দেশবাসীর মধ্যেই নয়, ক্ষমতার কাছে যারা রয়েছেন তাদের মধ্যেও একই ধরনের আশংকা বিরাজ করছে। প্রশাসনের কর্মকর্তা, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, প্রভাবশালী আমলা ও উপদেষ্টাদের পিএস, এপিএস ছাড়াও কতিপয় রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যেও একই ধরনের আতঙ্ক। দীর্ঘ ৫ বছর যারা ক্ষমতায় ছিলেন এবং  নানাভাবে সুবিধা নিয়েছেন ওই ব্যক্তিরা দেশের বাইরে চলে গেলে এর প্রভাব মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও পড়বে। তখন আন্দোলনে বিরোধীদলের মোকাবেলায় অনেকেই পেছনের সারিতে চলে যেতে পারে এই আশঙ্কা থেকেই সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে ওই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আগামীতে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার পাশাপাশি সরকারদলীয় রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা-কর্মীদের সক্রিয় রাখতে কাজ করা হচ্ছে বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।  
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, শুধু এই সরকারের আমলেই নয়, বিগত সরকারের সময়ও সুবিধাভোগীদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের নিরাপদে রাখতে দেশের বাইরে চলে যাওয়ার বিষয়টি নতুন কিছু নয়।
সূত্র জানায়, আওয়ামী সরকারের সমর্থক যে কর্মকর্তারা পাঁচ বছরে অতিরিক্ত সুবিধাভোগ করেছেন, তারা আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেছেন। সচিবালয়ের ভেতরে ও বাইরে দলীয় বিবেচনায় যে সব কর্মকর্তা-কর্মচারী যোগ্যদের টপকে একের পর এক পদোন্নতি, আকর্ষণীয় পোস্টিং বাগিয়ে নিয়েছেন, সীমাহীন দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছেন, সেবাপ্রার্থীসহ বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে অন্যায় ব্যবহার করেছেন, বেশিমাত্রায় ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন, বর্তমানে তাদের টেনশন বহুগুণ বেড়ে গেছে। তারা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। ক্ষমতার শেষ সময়ে বৈরি আবহাওয়া টের পেয়ে এখন তারা তৎপর হয়েছেন সহকর্মীদের তোপের মুখ থেকে বাঁচতে। ক্ষুব্ধ বঞ্চিতদের ম্যানেজ করার জন্য অনেককে পদোন্নতি দেয়ার সুপারিশও করছেন তারা সরকারের উপর মহলে। শুধ্ ুতাই নয়, এসব সুবিধাভোগী, যারা ইতিমধ্যে অবৈধভাবে বিপুল অর্থ কামিয়েছেন, তাদের একটি অংশ আগে ভাগে বিদেশে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন নানাভাবে।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, কতিপয় রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি প্রভাবশালী বিশেষ করে বিগত সময়ে অতি সুবিধাভোগী সরকারি কর্মকর্তারা অনেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভিসা নিয়ে রেখেছেন। এমনকি স্ত্রী-সন্তানের অসুস্থতাসহ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে সরকারি ছুটিও অনুমোদন করে রেখেছেন। ছুটি এবং ভিসা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে পরিস্থিতি বেগতিক দেখলে যে কোন সময় বিদেশে চম্পট দেয়া যায়। সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের যারা ছুটির ব্যবস্থা করতে পারেননি, তারা ভিন্ন কৌশল নিয়েছেন। গোপনে ব্যক্তিগত পাসপোর্ট তৈরি করে ভিসা লাগিয়ে নিয়েছেন। এক্ষেত্রে উড়োজাহাজের টিকেটের কোন সমস্যা হবে না। কারণ টিকেট আগেই কেটে রেখে দিয়েছেন। টিকেট এমনভাবে ম্যানেজ করে রেখেছেন যে চাইলেই তাৎক্ষণিক ওকে হয়ে যাবে। বিগত ৫ বছরে সরকার দলের সমর্থক নেতা-কর্মীরা অবৈধভাবে নানা সুবিধা আদায় করেছেন। বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের ওপর নানা রকম অত্যাচার, হয়রানি চালিয়ে গেছেন। কিন্তু ক্ষমতার শেষ সময়ে এসে উপলব্ধি করতে পারছেন, এবার শোধ নেবার সময় এসে গেছে বিরোধীদের। কিন্তু সেই শোধ নেয়ার চেহারাটা কী হতে পারে ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তারা।

Post a Comment