সীতাকুন্ডে শিবির-পুলিশ সংঘর্ষ ॥ মহাসড়ক অবরোধ
১৮ দলীয় জোটের ১৯ জনকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ॥ পাবনায় গোলাগুলি
নিজস্ব সংবাদদাতা, সীতাকুন্ডে (চট্টগ্রাম), ১ নবেম্বর ॥ সীতাকুন্ডে বিএনপি-জামায়াতের ৬০ ঘন্টা হরতালে সংঘটিত সহিংস ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে জড়িত ১৮ দলীয় জোটের ১৯ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিরাজ ভূঁইয়া রাস্তার মাথা, দক্ষিণ বাইপাস আমিরাবাদ এলাকায় সড়ক অবরোধ করে ৩০-৩৫টি গাড়িতে ভাংচুর চালায়। ২ ঘন্টা পর ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ অবরোধ সরিয়ে দিতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট,পাটকেল ছুঁড়ে মারতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পিকেটারদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সীতাকু-ু মডেল থানার (ওসি) এস এম বদিউজ্জামান বলেন, হরতাল চলাকালে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সহিংস ঘটনায় জড়িত ১৯ আসামিকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে গাড়ি ভাংচুর করে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ভাংচুর,অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের মামলা রয়েছে বলে তিনি জানান।উল্লেখ্য, ১৮ দলীয় জোটের টানা ৬০ ঘন্টার হরতালে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাংচুর,লুটপাট ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগে ১৪৮ জনকে আসামি করে দায়েরকৃত ৪ মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে বিডিনিউজ জানায়, জামায়াত-বিএনপির কর্মীরা সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে গাড়ি ভাংচুর করে। অন্তত দুটি বাস ও সাতটি ট্রাক তাদের ভাংচুরের শিকার হয়।
সকাল ১০টা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান বদলে অবরোধের চেষ্টা করে জামায়াত-বিএনপি কর্মীরা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে দুপক্ষের মধ্যে কিছুক্ষণ ধাওয়া পাল্টাধাওয়া চলে।
অবরোধ ও ভাংচুরের কারণে মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
পাবনায় গোলাগুলি ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা থেকে জানান, সদর উপজেলার গয়েশপুর বাজারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে ১০ জন। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে। আহতরা হলেন গয়েশপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান ও সহসভাপতি আব্দুল গনি। পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী হানিফুল ইসলাম জানান, রাতে গয়েশপুর বাজারে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা বসে ছিল। এ সময় অতর্কিতভাবে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন এলোপাতাড়ি গুলি ও বোমা নিক্ষেপ করে। এ সময় দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ৩ জনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহতরা হলো শালাইপুর গ্রামের আওয়াম লীগকর্মী উজ্জ্বল শেখ, হামিদপুর গ্রামের আইয়ুব আলী, রহম আলী প্রমুখ। এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম মিঠু জানান, অতর্কিতভাবে জামায়াত-বিএনপি আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউনিয়ন বিএনপি নেতা দাবি করেন, সন্ধ্যার পর বাজারে আমাদের লোকজনের ওপর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গুলি চালায়। এ সময় বিএনপি জামায়াতের লোকজন অত্মরক্ষার্থে ফাঁকা গুলি করে বাজার থেকে চলে আসে। গয়েশপুর বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
Post a Comment