১. সঠিকভাবে অজু করুন।
২. জায়নামাজ বিছিয়ে কিবলামূখী হয়ে দাঁড়ান (যেন চুখ দুটু সিজদাহর স্থানে তাকিয়ে থাকে, আঁকা-বাঁকা হয়ে দাঁড়ানো যাবেনা- টান-টান সোজা রাখতে হবে, বুক কাবার দিকে সোজা থাকবে, দু পা সোজা করে আংগুলগুলিকেও কাবা মূখী করতে হবে)।
৩. মনে মনে নিয়ত করুন, কোন ওয়াক্তের নামাজ এখন পড়বেন? সূন্নত, ফরজ, ওয়াজিব না নফল। নিয়তে তা উল্লেখ করুন।
৪. দুই হাত দুই কানের লতি বরাবর তুলে (হাত দুটু যেন কাবা মূখী হয়, আর হাতের আংগুলগুলি যেন পুরোপুরি খোলা এবং সোজা থাকে) তাকবীর "আল্লাহু আকবার" বলুন এবং তাহরীম (দুই হাত আস্তে করে নামিয়ে এনে নাভীর উপরে বা হাত রেখে তার উপরে ডান হাত বাধুন, যেন বা হাত নাভীর উপরে সমান ভাবে লেপ্টে থাকে আর ডান হাত বা হাতের উপরে এমনি ভাবে স্থাপন করুন যেনঃ মাঝের তিন আংগুল সোজা হয়ে লেপ্টে বসে আর দুপাশের দু-আংগুলে বা হাতের কব্জির উপরে চেপে/আঁকড়ে ধরে, আর দু হাতেরই কব্জির ভাজ যেন একে অপরের সাথে মিলে যায়)।
৫. এবার মনে মনে "আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম" ও "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম" পাঠ করুন।
৬. সূরা ফাতিহা পাঠ করুন।
৭. পরে একটি (যে কোন) সূরা পাঠ করুন, (সংক্ষিপ্ত করতে চাইলে, যে কোন সূরাহর প্রথম ৩টি আয়াত পাঠ করতে পারেন)।
৮. সূরা শেষ হলে "আল্লাহু আকবার" বলে রুকুতে যান।
(রুকু হচ্ছেঃ তাহরীম বাঁধা থেকে দুটি হাত আস্তে করে নিচের দিকে ছেড়ে দিন যেন দুটি হাতই নিচের দিক বরাবর সোজা হয়ে নেমে যায়। এবার আস্তে করে কোমর থেকে সামনের দিকে শরীরটাকে আধবাঁকা করুন এর সাথে আস্তে আস্তে হাত দুটু এনে দু হাটুর উপরে রাখুন, যেন হেলে যাওয়া শরীরটুকু দু হাতের সাহায্যে হাটুতে ভর দেয়। আর দু হাটুতে দু হাত রাখার সময় হাতের আংগুলগুলোকে ফাঁকা করে ছড়িয়ে দেবেন না, একটার সাথে আরেকটা মিলিয়ে সোজা করে হাটুর ঠিক উপরদিক থেকে বিছিয়ে রেখে ভর দিন। আর পা থেকে কোমর পর্যন্ত অংশকে টানটান করে সোজা রাখুন। আর মাথাকে এতটুকু ঝুকিয়ে আনুন যেন চোখদুটু দুপায়ের বৃদ্ধাংগুলি বরাবর দেখে, যেন মাথা, পিঠ ও কোমর সোজা বা সমান্তরাল থাকে)।
৯. রুকুতে থাকাবস্থায় রুকুর তসবিহ "সুবহানা রাব্বিয়াল আজীম" মনেমনে ৩বার পড়ুন (বা ৫ বার বা ৭ বার অথবা ততোধিক বেজোড় সংখ্যায় পড়ুন, ঈমাম হলে কমপক্ষে ৫ বার পড়ুন)।
১০. এবার "সামি আল্লাহ হুলিমান হামিদাহ" বলে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়ান। পূর্নাঙ্গ দাঁড়ানো হয়ে মনেমনে "রাব্বানা লাকালদ হামদ" বলুন।
১১. এবার, "আল্লাহু আকবার" বলে সিজদায় যান। সিজদাহঃ নিজেকে সামনের দিকে ঝুকে নিন, প্রথমে দুই হাঁটু, এরপর দুই হাত, তারপর নাক এবং সব শেষে কপাল মাটিতে রাখুন। দুইহাতের আংগুলগুলি একত্রে মিলিয়ে রাখুন। দুই হাতের মাঝখানে মাথা ও মুখ রাখবেন। হাত মাথা ছাড়ায়ে যেন সামনের দিকে না যায়। হাতের তালু মাটিতে থাকবে, কিন্তু কবজি যেন মাটিতে না আটকায়। হাটু হতে পায়ের পাতার সাথে উরু যেন লেগে না থাকে বরং দেহ হতে বগল পৃথক থাকবে।
১২. এবার সিজদাহর তাসবীহ "সুবহানা রাব্বিয়াল আ'লা" ৩ বার পড়বেন। বা ৫/৭ বার বা ততোধিক বেজোড় সংখ্যায় পড়বেন। ঈমাম হলে নিম্নতম ৫ বার পড়বেন।
১৩. এবার "আল্লাহু আকবার" বলে উঠে বসবেন। বসার নিয়মঃ বাম পায়ের পাতা বিছিয়ে তার উপর বসতে হবে এবং ডান পায়ের আংগুলগুলিকে দুমড়ে কিবলামূখী করে রাখতে হবে। একবার "সুবাহান আল্লাহ" বলতে যতক্ষণ সময় লাগে অন্তত এতটুকু সময় বসে থাকুন।
১৪. এবার "আল্লাহু আকবার" বলে দ্বিতীয় সিজদায় যাবেন এবং আগের মতো নিয়ম অনুযায়ী সিজদাহ করবেন, তসবীহ করবেন।
১৫. এবার "আল্লাহু আকবার" বলে উঠে দাঁড়াবেন। উঠার সময়ঃ সর্ব প্রথমে কপাল, তারপরে নাক, তারপরে হাত এবং শেষে হাঁটু উঠাবেন। উঠে দাঁড়ানোর সময় রুকুতে যাওয়ার আগে যেমন করে হাত বেঁধে দাঁড়িয়েছিলেন এখন এমনি করে দাঁড়ান।
১৬. দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়ায়ে, " বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম" বলে সূরা ফাতিহা পাঠ করুন এবং সাথে অন্য একটি সূরাহ বা অন্তত সূরাহর ৩টি আয়াত পাঠ করুন (আয়াত বা সূরা পাঠের সময় কোরআন শরীফের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে)।
১৭. এবার পূর্ব নিয়ম অনুযায়ী রুকুতে যান, রুকুর তাসবীহ পড়ুন, উঠে দাঁড়িয়ে "রাবানা লাকালদ হামদ" বলুন এবং পূর্ব নিয়ম অনুযায়ী সিজদায় যান সিজদাহর তাসবীহ পড়ুন, এক সিজদাহ শেষ করে আরেক সিজদাহ দিন। এবার দ্বিতীয় সিজদাহ থেকে উঠে বসুন (এক আর দুই সিজদাহর মাঝখানে যেভাবে বসার নিয়ম, ঠিক একইভাবে বসুন)।
নামাজ দুই রাকাতের হলেঃ এই বসা অবস্থায় আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ, দু'আ মাসূরা পড়ে ডানে বামে সালাম ফিরান (দ্বিতীয়বার সালাম ফিরানোর সাথে সাথে নামাজ শেষ হলো)।
সালাম ফিরানোর নিয়মঃ "আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ" বলে প্রথমে ডান দিকে (ডান কাঁধ বরাবর তাকিয়ে) ফিরুন এবং পূনরায় "আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ" বলে বা দিকে (বাম কাঁধ বরাবর তাকিয়ে) ফিরুন।
আর নামাজ তিন রাকাত হলেঃ
১৮. আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ পড়া শেষ করে (সালাম ফিরানো যাবেনা, এর আগে) উঠে দাঁড়াতে হবে এবং তৃতীয় রাকাতের জন্য "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম" বলে সূরাহ ফাতিহা পাঠ করতে হবে (সাথে অন্য কোন সূরা বা আয়াত পাঠ করতে হবেনা) এবং রুকুতে যেতে হবে। রুকু শেষ করে পরপর দুটি (আগের নিয়মেই) সিজদায় যেতে হবে। সিজদাহ শেষ করে বসে আবার আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ, দু'আ মাসূরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হবে।
আর নামাজ চার রাকাত হলেঃ
১৮. তৃতীয় রাকাতের দ্বিতীয় সেজদাহ শেষ করে বসা যাবেনা, সোজা দাঁড়িয়ে যেতে হবে এবং চথুর্থ রাকাতের জন্য "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম" বলে সূরাহ ফাতিহা পাঠ করতে হবে (সাথে অন্য কোন সূরা বা আয়াত পাঠ করতে হবেনা) এবং রুকুতে যেতে হবে। রুকু শেষ করে পরপর দুটি (আগের নিয়মেই) সিজদায় যেতে হবে। সিজদাহ শেষ করে বসে আবার আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ, দু'আ মাসূরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করতে হবে।
বিঃদ্রঃ সালাম ফিরানোর পরে দো'আ নামাজের অংশ নয়।
ক. ওয়াজিব বা সুন্নত নামাজে শেষের দুই রাকাতে সূরাহ ফাতিহার পর আরেকটি সূরাহ পড়তে হবে।
খ. জামাতের নামাজে মুক্তাদিগণের কোন সূরাহ পড়তে হবেনা, ঈমাম পড়বেন। কিন্তু বাকি সব তাসবীহ পড়তে হবে।
গ. যোহর এবং আসরের ফরজ নামাজের সূরাহ গুলি নিঃশব্দে পড়তে হবে কিন্তু মাগরীব, এশা, ফজরের ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতের সূরাহগুলো উচ্চস্বরে পড়তে হবে।
ঘ. জুম'আ এবং ঈদের নামাজের সূরাহগুলো উচ্চস্বরে পড়তে হবে।
(সহীহ নামাজ শিক্ষার্থীদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, এই নোটের পরবর্তী নোটে পর্যায়ক্রমে প্রতি ওয়াক্তের নামাজ (ফজর, যোহর, আসর, মাগরীব, এশা) সুন্নত, ফরজ (বেতের থাকলে তা সহ) আলাদা-আলাদা এবং পূর্ণাঙ্গভাবে আলোচনায় আনা হবে। আর এই নোটে কোন অনাকাংক্ষীত ভুল বা প্রিন্টিং মিসট্যাক থাকলে তা ধরিয়ে দেওয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ রইল। ধন্যবাদান্তে - এডমিন।)
Post a Comment